নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫৭ হাজার বাংলাদেশি পবিত্র হজ পালনের সুযোগ পাচ্ছেন। তবে হজযাত্রীদের বয়স ৬৫ বছরের নিচে হতে হবে এমন নির্দেশনা দিয়েছে সৌদি আরব। ২০২২ সালের হজযাত্রীদের জন্য এ নির্দেশনা দেয় দেশটি।

এ পরিস্থিতিতে শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) হজ যাত্রীদের জন্য একটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। যাতে ৬৫ বছর বা তার কম বয়সীরা এ বছর হজ পালনের সুযোগ পাচ্ছেন।
হজযাত্রীদের জন্য সরকারের দেয়া নির্দেশনা
ক. ২০২২ সালে শুধু ৬৫ বছরের কম বয়সী ব্যক্তিরা হজ পালনের সুযোগ পাবেন।
খ. ২০২০ সালে সব সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধিত হজযাত্রী এবার হজে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।
গ. ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে নিবন্ধিত হজযাত্রী বা নিবন্ধিত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের কেউ হজে যেতে চাইলে শূন্য কোটায় তিনি অগ্রাধিকার পাবেন।
সে ক্ষেত্রে সরকারি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ঢাকার হজ অফিসের পরিচালকের কাছে অতিসত্বর বদলি হজযাত্রীর পাসপোর্টসহ আবেদন করতে হবে।
বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আগ্রহীদের নিজ নিজ হজ এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। দুই ক্ষেত্রেই প্রস্তাবিত ব্যক্তির প্রাক-নিবন্ধন করতে হবে।
ঘ. ২০২২ সালের হজে যেতে আগ্রহীদের স্বল্পতম সময়ের মধ্যে নতুনভাবে নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ করে ভিসা আবেদনের পরামর্শ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
এ জন্য কিছু বিষয়ে প্রস্তুতি নিতে হবে তাদের। এগুলোর মধ্যে আছে:
১. ২০২০ সালের নিবন্ধিত সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের ২০২২ সালের হজ প্যাকেজ ঘোষণার ৩ কার্যদিবসের মধ্যে যেকোনো নিবন্ধন কেন্দ্র হতে প্যাকেজ স্থানান্তর শেষ করতে হবে।
এ জন্য, ২০২০ সালে পরিশোধিত প্যাকেজ মূল্য সমন্বয় করে ২০২২ সালের যেকোনো একটি প্যাকেজের অবশিষ্ট অর্থ ভাউচারের মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকে জমা করতে হবে। প্যাকেজ স্থানান্তর/নিবন্ধনের ৩ দিনের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের পাসপোর্ট নিজ দায়িত্বে ঢাকার হজ অফিসে জমা দিতে হবে।
২. বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২০২০ সালের নিবন্ধিত হজযাত্রীরা নিজ নিজ এজেন্সি ঘোষিত প্যাকেজ (সরকারি ব্যবস্থাপনার সর্বনিম্ন প্যাকেজের নিম্নে নয়) দ্রুত নির্ধারণ ও অবশিষ্ট অর্থ পরিশোধ করে এজেন্সির সহায়তায় হজে গমনের কার্যক্রম গ্রহণ করবেন।
৩. নিবন্ধন নিশ্চিত করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে গমনেচ্ছুদের পাসপোর্টে কমপক্ষে ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদ থাকতে হবে। যাদের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বা নতুন করে পাসপোর্ট করতে হবে, তাদের ‘অতীব জরুরি’ ভিত্তিতে পাসপোর্ট করাতে হবে।
৪. হজের সময়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি স্থানে গ্রুপভিত্তিক চলাচল করতে হবে।
৫. হজ সফরের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজকীয় সৌদি সরকারের প্রবর্তিত নিয়ম অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
৬. কোভিড ভ্যাকসিন এবং ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ নেয়ার সনদ হজের পুরো সফরে ব্যবহারের জন্য একাধিক কপি বা আইডি কার্ড আকারে লেমিনেট করে রাখতে হবে।
৭. নিবন্ধন ছাড়া টিকা নিয়ে থাকলে অথবা ‘সুরক্ষা’ অ্যাপে টিকা নেয়ার তথ্য যুক্ত নেই এমন হজযাত্রীকে টিকা নেয়ার তথ্য ‘সুরক্ষা’ অ্যাপে যুক্ত করে সনদ নিতে হবে। অর্থাৎ টিকা নিলেই হবে না, টিকা গ্রহণের সার্টিফিকেট অবশ্যই সঙ্গে নিতে হবে।
৮. হজে গমনের ৭২ ঘণ্টারর মধ্যে কোভিড পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট সঙ্গে নিতে হবে।
৯. হজযাত্রীদের মধ্যে যারা নিয়মিত সেবন করেন এমন কোনো ওষুধ সৌদি আরবে নেয়ার প্রয়োজন থাকলে তা অবশ্যই রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসকের/হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্র সঙ্গে করে লাগেজে নিতে হবে। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনো ওষুধ সঙ্গে নেয়া যাবে না।
১০. হজযাত্রী, গাইড বা সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি জর্দা, গুলসহ নেশাজাতীয় দ্রব্য সঙ্গে নিতে পারবেন না।
১১. সৌদি সরকারের নিয়ম অনুযায়ী সৌদি আরব হতে প্রত্যাগমনের সময় ৬০ হাজার সৌদি রিয়ালের অধিক নগদ অর্থ বা সমমূল্যের স্বর্ণালংকার বা মূল্যবান কোনো দ্রব্য বহন করলে সে যাত্রীকে সৌদি স্থানীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে এবং মূল্যবান দ্রব্য কেনার ইলেকট্রিক্যাল ভাউচার দেখাতে হবে।
১২. হজের বিষয়ে কোনো তথ্য জানার জন্য ঢাকার হজ অফিসের কলসেন্টার ০৯৬০২৬৬৬৭০৭ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।
হজের বিষয়ে এর বাইরে কোনো তথ্য জানার প্রয়োজন হলে হজ অনুবিভাগের ফোকাল পয়েন্ট উপসচিব (হজ-১) আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীনের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়; যা ০১৭২০-২০৯৫৯৯ এই মোবাইল নম্বরে পাওয়া যাবে।
এ ছাড়া akm.shaheen@gmail.com-এ ই-মেইল পাঠিয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।