সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা জানিয়েছে, কয়েক দফা ভূকম্পনে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠা নগরের ছয়টি বিপণিবিতান ও একটি দোকান ১০ দিনের জন্য বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। গত ৩১ মে এই নির্দেশনা জারির পর ১০ জুন থেকে এসব বিপণিবিতান চালুর কথা ছিল। তবে এগুলো চালুর আগে কতটুকু ব্যবহারের উপযোগী, তা যাচাই করে দেখেছে বিশেষজ্ঞ দুটি দল।
১০ জুন সকালে ও বিকেলে শাবিপ্রবির পরিবেশ ও পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক জহির বিন আলম এবং মুশতাক আহমেদের নেতৃত্বে পৃথক দুটি দল বন্ধ থাকা বিপণিবিতানগুলো পর্যবেক্ষণ করে। এরপর দল দুটি গত বুধবার তাদের পর্যবেক্ষণ–পরবর্তী প্রতিবেদন ও মতামত সিটি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছে। সেখানে তারা প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে বিপণিবিতানগুলো ঝুঁকিপূর্ণ বলে মত দেয়। তবে ভবনগুলো ঠিক কতটুকু ঝুঁকিপূর্ণ, সেটি নির্ণয় করার জন্য প্রকৌশলগত বিস্তারিত মূল্যায়ন প্রয়োজন বলেও তারা প্রতিবেদনে জানিয়েছে। চলতি সপ্তাহেই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, প্রকৌশলগত বিস্তারিত মূল্যায়ন করতে বেশ টাকার প্রয়োজন। ছয়টি বিপণিবিতানের মধ্যে একটি সিটি করপোরেশনের মালিকানাধীন, অন্যগুলো ব্যক্তিগত। তাই পরবর্তী কার্যক্রম চালিয়ে নিতে টাকা কোথা থেকে আসবে, এ নিয়ে বিপণিবিতানগুলোর মালিক ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এরপরই মূল্যায়নের জন্য বিপণিবিতানগুলোর নকশা, মাটি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র বিশেষজ্ঞ দলের কাছে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ২১ ও ৩০ মে এবং ৭ জুন সিলেটে মোট আটবার ভূকম্পন অনুভূত হয়। এসব ভূকম্পনের উৎপত্তিস্থল সিলেটের বিভিন্ন এলাকা। প্রথম দফার ভূকম্পনের পর ৩১ মে থেকে নগরের ছয়টি বিপণিবিতান ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় ১০ দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল। বিপণিবিতানগুলো হচ্ছে সুরমা মার্কেট (তিনতলা), মধুবন সুপার মার্কেট (ছয়তলা), মিতালী ম্যানশন (পাঁচতলা), রাজা ম্যানশন (তিনতলা), সিটি সুপার মার্কেট (তিনতলা) এবং সমবায় ভবন মার্কেট (তিনতলা)। নগরের জিন্দাবাজার এলাকার জেন্টস গ্যালারি (দুই তলা) নামের একটি দোকানকেও একই নির্দেশ দেওয়া হয়।
এক সভা থেকে ৯ জুন সিটি করপোরেশন এবং শাবিপ্রবি নগরের ২৭টি ওয়ার্ডের ৪২ হাজার ভবনে সমীক্ষা চালিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেয়। নগরে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে ক্ষয়ক্ষতি ও ঝুঁকি এড়াতে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগও নেওয়া হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়। এ কাজে লোকবল ও আর্থিক সহযোগিতা দেবে সিটি করপোরেশন। পরে স্বল্পমেয়াদি কাজের অংশ হিসেবে ১০ জুন শাবিপ্রবির সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞ ও অধ্যাপকেরা নগরের ঝুঁকিপূর্ণ বিপণিবিতান পরিদর্শন করেছেন। তবে এসব বিপণিবিতান ও দোকান এখন পুনরায় চালু হয়েছে