ঢাকাশনিবার , ৪ সেপ্টেম্বর ২০২১
  1. অনান্য
  2. অর্থ ও বাণিজ্য
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. ইসলাম
  7. কিশোরগঞ্জ
  8. কুড়িগ্রাম
  9. কুমিল্লা
  10. কুষ্টিয়া
  11. কৃষি
  12. খেলাধুলা
  13. খোলা কলাম
  14. গাইবান্ধা
  15. গাজীপুর

শকুন সংরক্ষণে ব্যক্তি-সংস্থাকে সহায়তা দেবে সরকার

350
Tanim Tv
সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১ ৩:৫২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সরকারি উদ্যোগে শকুন সংরক্ষণে ব্যক্তি-সংস্থাকে স্বীকৃতি ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।

শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক শকুন সচেতনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বন্যপ্রাণীর বসবাসে পরিবেশ সংরক্ষণ করতে পারিনি। আজ শুধু শকুন নয়, আমরা অনেক প্রাণী হারাতে বসেছি। আমরা দেখেছি, একটি গরু মারা গেলে শত শত শকুন সেটাকে ভক্ষণ করতো।’

তিনি বলেন, ‘আজ সেই শকুন শূন্য হয়ে গেছে। ডাইক্লোফেনাক ও কিটোপ্রফেন নামের ব্যথানাশক ওষুধের কারণে শকুন মারা গেছে। কয়েকদিন আগে এটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটা যাতে সঠিকভাবে বন্ধ হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ওষুধ ছাড়াও আরও অনেক কারণ থাকতে পারে; যেমন বাসস্থল নেই। শকুন বসার মতো বড় ও উচু গাছ কমে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা শকুনের আবাসস্থল করেছি। সুন্দরবন ও রেমা-কালেঙ্গায় বণ্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হয়েছে। বন বিভাগকে শকুনের আবাসস্থল রক্ষা করতে হবে। পরিবেশ সংরক্ষণে শকুনের বিকল্প নেই।’

বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশন ফেডারেশনের (বিবিসিএফ) সভাপতি এস এম ইকবালের আর্থিক সহযোগিতা ও স্বীকৃতির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী বলেন, ‘সহযোগিতা ও স্বীকৃতির ব্যবস্থা করবো। আপনারা যারা বন্যপ্রাণী রক্ষায় কাজ করেছেন।’

‘প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নিবেদিত ব্যক্তি, বিজ্ঞানীদের শকুন রক্ষার জন্য নিজ নিজ অবস্থান থেকে একনিষ্ঠভাবে দায়িত্বপালন করতে হবে। সরকার শকুন সংরক্ষণকারী ব্যক্তি ও সংস্থাকে স্বীকৃতি ও প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে’ বলেন মন্ত্রী।

শকুন সংরক্ষণে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘শকুন রক্ষায় বিশ্বব্যাপী একটি উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছে। অন্যান্য ক্ষতিকর ওষুধ যেমন ফ্লুনিক্সিন, এসিক্লোফেনাক যেন দেশের বাজারে না আসে, সে ব্যাপারেও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নির্দেশনা দিয়েছে। শকুনের জন্য নিরাপদ ওষুধ মেলোক্সিক্যাম রোগাক্রান্ত পশুদের জন্য ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’ বাংলাদেশ জাতীয় শকুন সংরক্ষণ কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, ‘স্বাধীনতার সময় প্রচুর শকুন আমাদের দেশে ঘুরে বেড়াতো। কয়েক যুগ পরে আমি যখন শরণখোলা রেঞ্জে গিয়েছিলাম, তখন একটিমাত্র শকুন দেখলাম। আমার মনে হলো- এ শকুন মনে হয় সুস্থ কোনো শকুন নয়। এটা অসুস্থ বলেই একা। কারণ শকুন দলে দলে থাকে। একটার দর্শন পেয়ে বুঝেছি, এখনো শকুন আছে।’

উপমন্ত্রী বলেন, ‘তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা বেশি থাকলে এ ব্যাপারে আমরা বেশি এগিয়ে যাবে। শকুনের প্রজনন আগের চেয়ে একটু বেড়েছে, এটাই আশার কথা। সুন্দরবনে হয়তো সেভাবে কোলাহলযুক্ত জায়গায় শকুনরা বসবাস করে না। কিন্তু অন্যান্য যেসব জায়গায় শকুনদের আবাসস্থল আছে, সেই জায়গাগুলো সংরক্ষণের জন্য আরও আমাদের প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’

‘কোলাহল শকুনের বংশ বৃদ্ধির একটি বাধা। আমরা আশা করবো- অন্তত প্রজনন মৌসুমে, একটি অঞ্চলে যাতে মানুষ প্রবেশ করতে না পারে, ডিস্টার্ব করতে না পারে। তবে আমরা যে আশায় আছি শকুনের সংখ্যা বৃদ্ধি, যেটা এরই মধ্যে কিছুটা হয়েছে। সেটা আরও বেশি হবে’ বলেন হাবিবুন নাহার।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘মানুষ হিসেবে খাদ্য ও বাসস্থান বাদ দিয়ে বেঁচে থাকা কঠিন। শকুন কী খাচ্ছে, সে বিষয়ে গবেষণা দরকার। গবেষণা সংখ্যা দিয়ে না বলে, উদ্দেশ্য দিয়ে বলতে চাই, শকুন কী খাচ্ছে সে গবেষণাটা করা দরকার। খাবারের ব্যাপারটা গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘বলা হচ্ছে, শকুন শিকার করে খায় না, রেডি করা খাবার খায়। আমরা তার খাবারটা রেডি রাখছি কি-না। আমরা একটা প্রাণী ধংসের কারণ নইতো।’

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ও পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক বলেন, ‘ওষুধ নিষিদ্ধ করার পর কোম্পানিগুলো ক্ষতির মুখে পড়ে। এরপরও তারা শকুন রক্ষায় এগিয়ে এসেছে, একই সঙ্গে কাজ করছে।’

প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, ‘শকুন প্রকৃতির ঝাড়ুদার। শকুন এমন স্থানে গিয়ে পরিস্কার করে, যেখানে আমরা যেতে পারি না। শকুন অ্যানথ্রাক্সও হজম করে ফেলে। এমন একটা প্রাণী আমাদের অনেক থাকা উচিত। এটা রক্ষায় যা যা করা দরকার সবাইকে তাই করতে হবে।’

মানুষের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের কারণে শকুন হারিয়ে যাচ্ছে দাবি করে বিবিসিএফ সভাপতি এস এম ইকবাল বলেন, ‘আমরা নিজের পকেটের টাকা খরচ করে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে কাজ করি। সরকার আমাদের সহযোগিতা করতে পারে।’

মূল প্রবন্ধে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার এ বি এম সারওয়ার আলম জানান, ‘ব্যথানাশাক ওষুধের কারণে মূলত শকুন হারিয়ে যাচ্ছে। গরুকে ব্যথানাশক ওষুধ দেওয়া হলে সেই গরু মারা গেলে, সেই গরু খেলে শকুন মারা যায়।’

তিনি জানান, ১৯৯০ সালে বাংলাদেশে পরিযায়ীসহ মোট শকুনের সংখ্যা ছিল ১০ লাখ। ২০১২ সালে তা মাত্র ৫৫০টিতে নেমে আসে। ২০১৬ সালে দেশে শকুন দেখা যায় ২৪০টি। ২০১৮ সালের বন বিভাগ ও আইইউসিএনের সর্বশেষ জরিপের তথ্যানুযায়ী, দেশে শকুন দেখা গেছে ২৬০টি।

সরকারের বহুমুখী পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে শকুনের প্রজনন সফলতা ৪৪ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২০ সালে ৫৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রকিবুল আমিন ও বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সার্কেলের বন সংরক্ষক মোল্লা রেজাউল করিম অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তৃতা করেন।

সাংবাদিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি! তানিম টিভি লি:  এর  সংবাদ সংগ্রহ করার জন্য দেশের কিছু (জেলা ব্যতীত) সকল জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কর্মঠ, সৎ ও সাহসী কিছু পুরুষ ও মহিলা সংবাদদাতা/প্রতিনিধি নিয়োগ করা হবে। আগ্রহী প্রার্থীরা পূর্ণাঙ্গ জীবন বৃত্তান্ত ই-মেইলে tanimtvltd.news1@gmail.com