বিয়ে করেছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। পাত্রী দিনাজপুরের বিরামপুরের মেয়ে শাম্মী আকতার মনি। পেশায় তিনি আইনজীবী।

সপ্তাহ খানেক আগে রাজধানীর উত্তরায় ঘরোয়া পরিবেশে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। দুজনেরই এটি দ্বিতীয় বিয়ে।
এর আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে বিয়ে করার অনুমতি পেয়েছিলেন রেলমন্ত্রী। অনুমতি পেয়ে বিয়েও করে ফেলেন। তবে বিষয়টি প্রথম দিকে চেপে গিয়েছিলেন মন্ত্রী। কিন্তু কেন?
এ বিষয়ে নূরুল ইসলাম সুজন গণমাধ্যমকে বলেন, বিয়ে করেছি। তা অস্বীকার করার কিছু নেই। যা হয়েছে তা বলতে হবে। কিন্তু গণমাধ্যমকে বিয়ের বিষয়টি প্রথমে জানাইনি। কারণ, আগে তো প্রধানমন্ত্রীকে খুশির খবরটা জানাতে হবে। যতক্ষণ প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়নি, ততক্ষণ তাই অন্যদের কাছেও বিয়ে নিয়ে মুখ খুলিনি।
রেলমন্ত্রী জানান, শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীকে টেলিফোনে বিষয়টি জানান তিনি। এখন তাই বিয়ে নিয়ে এখন আর লুকোচুরির কিছু নেই।
সুজন বলেন, আমি চেয়েছি— প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে অন্যদের জানাব। তবে বিয়ের খবরটি যেহেতু সত্য ছিল তাই সরাসরি কখনও অস্বীকার করিনি। বিয়ে করেছি- সেটা বলতে তো বাধা নেই।
বিয়ের খবরের পর প্রতিক্রিয়া কি, বিষয়ে খেয়াল রাখছিলেন রেলমন্ত্রী। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে যখন দুই-একটা মিডিয়ায় প্রতিবেদন হয়েছে- তখন ভাবলাম-১৪ তারিখ পার্লামেন্ট আছে, তখন এ বিষয়ে কথা বলব। কারণ, টেলিফোনে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে চাইনি। তবে শেষ পর্যন্ত গত শুক্রবার পরিস্থিতি বিবেচনায় টেলিফোনেই জানাতে হলো। বিয়ের ব্যাপারে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে তার ঘনিষ্ঠ অনেকেও জানতেন না বলে তিনি জানান।
৫৬ বছর বয়সী রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন গত ৫ জুন দ্বিতীয় বিয়ে করেন। রাজধানীর উত্তরায় কনের ভাড়া বাসায় এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
রেলমন্ত্রীর নতুন জীবনসঙ্গী ৩৬ বছর বয়সী আইনজীবী শাম্মী আকতার মণি। জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঘরোয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মণিকে ঘরে তুলবেন রেলমন্ত্রী।
২০১৮ সালের নির্বাচনের আগের দিন ২৯ ডিসেম্বর নূরুল ইসলাম সুজনের স্ত্রী নিলুফার ইসলাম ৫৮ বছর বয়সে মারা যান। তারপর সঙ্গীহীন ছিলেন সুজন। তার দুই মেয়ে ও এক ছেলে আছেন- তাদের সবাই বিবাহিত। জানা গেছে, রেলমন্ত্রীর বিয়েতে সন্তানদের সায় ছিল।
২০১১ সালে মণির প্রথম বিয়ের বিচ্ছেদ হয়। তার একটি মেয়ে আছে। মণির প্রথম স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্সের পর তিনি মেয়েকে নিয়ে থাকেন। মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী।
জানা গেছে, শাম্মী আকতার মণি বিরামপুরে নতুন বাজার এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের মেয়ে। তারা দুই ভাই এক বোন। দুই ভাই বিরামপুরের বাসায় থাকেন।
বড় ভাই মিলন হোসেন ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী। অপরজন স্থানীয় ব্যবসায়ী। তাদের আগের বাড়ি পাবনায় ছিল।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে (পিডিবি) লাইনম্যান পদে চাকরির সুবাদে কয়েক বছর আগে মনির বাবা আব্দুর রহিম বিরামপুরে এসে জায়গা কিনে স্থায়ী হন।
মিলন জানান, ঘরোয়াভাবে শনিবার তার বোনের সঙ্গে রেলমন্ত্রীর বিয়ে হয়। বিয়েতে বরপক্ষে উপস্থিত ছিলেন বিরামপুরের বিচারপতি ইজারুল হক ও তার স্ত্রী। কনে পক্ষে তিনি ও তার ভাই উপস্থিত ছিলেন।
তিনি জানান, মনি বর্তমানে উত্তরায় থাকে। ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের অ্যাডমিনে চাকরি করতো। এরইমধ্যে ল’ পাস করে হাইকোর্টে প্র্যাকটিস করছেন।
পঞ্চগড়-২ (বোদা-দেবীগঞ্জ) আসন থেকে নবম, দশম এবং একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন নূরুল ইসলাম সুজন। ২০১৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার পর রেলমন্ত্রী হন তিনি।