যাত্রাবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে স্থাপিত চেকপোস্টগুলো অনেকটাই শিথিল হয়ে গেছে। চেকে অনেকটাই অনীহা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের। এই এলাকায় ঢাকা থেকে বের হওয়ার মূল চেকপোস্টে মাঝে মাঝে চেক হচ্ছে। চেকপোস্টে শিথিলতায় মহাসড়কে নিষিদ্ধ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে।

শনিবার (১০ জুলাই) শনির আখড়া, রায়েরবাগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চেকপোস্ট ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শনির আখড়া ওভার ব্রিজের নিচে ঢাকা থেকে বের হওয়ার মূল্য চেকপোস্টে গিয়ে দেখা গেছে, কোনো চেক হচ্ছে না। চেকপোস্টে তিনজন কনস্টেবল সার্জেন্টদের মোটরসাইকেলের ওপর বসে আছেন। খানিক দূরে তিনজন সার্জেন্ট দাঁড়িয়ে আলাপ করছিলেন।
পরিচয় দিয়ে চেকপোস্টের পরিস্থিতি জানতে চাইলে তারা বলেন, সকালের নাস্তার বিরতি যাচ্ছে। এখন আবার কার্যক্রম শুরু হবে। কিছু সময় পরেই গড়ি চেক করা শুরু করেন তারা।
এখানে দায়িত্বপালনকারী যাত্রাবাড়ী ট্রাফিক জোনের সার্জেন্ট মাসুদ রানা বলেন, ‘শনিবার হওয়ায় আজকে গাড়ি একটু কম। তবে রিকশা-ভ্যান প্রচুর দেখা যাচ্ছে।’
চেক করার ক্ষেত্র কিছুটা শিথিলতা যাচ্ছে কিনা- জানতে চাইলে বলেন, ‘দেখেন আপনি, চলতে পারবে না এমন কোনো গাড়ি চলছে কিনা দেখেন। সিএনজি অটোরিকশায় হয় রোগী, না হয় বিদেশযাত্রী। প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসে করে শিল্পকারখানার কর্মকর্তা, শ্রমিকরা যাতায়াত করছেন।’
চেকপোস্টে দায়িত্ব পালনকারী একজন সার্জেন্ট নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘একটা সিএনজি অটোরিকশা ধরছিলাম, যেটা ২০০ টাকা ভাড়ায় যাত্রী নিয়েছে। ধরার পর চালক পায়ে ধরে কেঁদে দিয়েছেন। সংসার চলে না, বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে বের হয়েছেন। এসব কেস কী করবো বলেন, আমরাও তো মানুষ। বাস্তবতা বুঝি।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এই চেকপোস্টগুলো এখন মূলত তাদের বড় কোনো কর্মকর্তা কিংবা গণমাধ্যমের কর্মীরা এলে সক্রিয় হয়। এ ছাড়া বেশিরভাগ সময় দায়িত্বপ্রাপ্তরা অনেকটা রিল্যাক্সে থাকেন।
শনির আখড়ার চেকপোস্টের পর রায়েরবাগেও মহাসড়কের দু-পাশে দুটি চেকপোস্ট রয়েছে। সেগুলো গত কয়েকদিন ধরেই অনেকটা নিষ্কিয়।
চেকপোস্টগুলোর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল শুরু করেছে। মহাসড়কে এসব অটোরিকশা আগে থেকেই নিষিদ্ধ। শনিবার দেখা গেছে শনির আখড়ায় মূল চেকপোস্ট থেকে খানিকটা পশ্চিমদিকে মহাসড়কে আন্ডারপাসের উপরে এসব অটোরিকশা স্ট্যান্ড গড়ে তুলেছে। সেখানে থেকে জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়ায় সাইনবোর্ড যাওয়ার যাত্রী তোলা হচ্ছে।
শনিবার এই মহাসড়ক ধরে অনেক ভ্যানগাড়িকেও যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় গত ১ জুলাই সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। এই বিধিনিষেধ ছিল ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত। পরে বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও ৭ দিন অর্থাৎ ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে ২১টি শর্ত দেয়া হয়। শর্ত অনুযায়ী, এ সময়ে জরুরি সেবা দেয়া দফতর-সংস্থা ছাড়া সরকারি-বেসররকারি অফিস, যন্ত্রচালিত যানবাহন, শপিংমল দোকানপাট বন্ধ থাকবে। খোলা থাকবে শিল্প-কারখানা। জনসমাবেশ হয় এমন কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না এই সময়ে।