সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় বিশেষত ফলজ বৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে সবুজ বাংলাদেশকে সবুজতর করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। তিনি পশু-পাখি ও বৃক্ষের বৈচিত্র্য রক্ষা তথা উদ্ভিদ ও প্রাণিকুল রক্ষায় বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে বিশাল সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বুধবার (১১ আগস্ট) বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান।
সবুজ দেশ গড়ার লক্ষ্যে পুনাক এই কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ‘মুজিববর্ষে অঙ্গীকার করি, সোনার বাংলা সবুজ করি’ প্রত্যয়ে বাংলাদেশ পুলিশ ও পুনাক কর্তৃক যৌথভাবে পরিচালিত সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি সকল পুলিশ ইউনিটের সঙ্গে একযোগে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ।
এ উপলক্ষে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের হল অব প্রাইড কনফারেন্স রুমে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পুনাক সভানেত্রী জিশান মির্জা। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট প্রধানরা ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
এসময় আইজিপি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে এক কোটি গাছ লাগানোর কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির লক্ষ্য অর্জনের জন্য সারাদেশে বাংলাদেশ পুলিশ ও পুনাক যে কর্মসূচি নিয়েছে তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এ কর্মসূচি দেশের জন্য, রাষ্ট্রের জন্য, সমাজের জন্য এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
পুনাকের কার্যক্রমের প্রশংসা করে আইজিপি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকে পুনাক বহুমাত্রিক সৃজনশীল উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে সমাজ এবং পুলিশ পরিবারের কল্যাণে অনেক অবদান রেখে আসছে। করোনাকালেও দুস্থ ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে পুনাক। করোনাকালে কেন্দ্রীয় পুনাক প্রায় প্রতিরাতেই দুস্থ ও অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ করেছে। গত রমজানে প্রায় প্রতিদিন ইফতার বিতরণ করেছে। কয়েকদিন আগে বঙ্গমাতার জন্মদিনে টুঙ্গিপাড়ায় গিয়ে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন করেছে, এটি একটি অভিনব কর্মসূচি ছিল। পুলিশ পরিবারের কল্যাণের পাশাপাশি এটাকে দেশ ও জাতির কল্যাণে পুলিশের গণ্ডির বাইরে নিয়ে আসা একটি সাহসী পদক্ষেপ।’ তিনি এজন্য পুনাক সভানেত্রীসহ সকল নেতৃবৃন্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
আইজিপি আরও বলেন, ‘পুনাকের কর্মসূচি সুধী মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে এবং ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।’ দেশ, সমাজ ও পুলিশ পরিবারের কল্যাণে আগামীতে এসব কর্মসূচি আরও বেগবান করার হবে বলে প্রত্যাশা করেন আইজিপি।
পুনাক সভানেত্রী জিশান মির্জা বলেন, ‘পুনাক একটি অলাভজনক, সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। আমরা আমাদের সীমিত সামর্থ্য দিয়ে পুলিশ পরিবারের পাশাপাশি দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে চাই। আমরা প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে গত ৮ আগস্ট বঙ্গমাতার জন্মদিনে টুঙ্গিপাড়ায় কম্বো মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করেছি। সেখানে তিন শতাধিক অসহায় মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়েছে। আমরা বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখি। সকলের সহযোগিতা থাকলে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিকে আমরা একটি অনন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে পারবো।’
তিনি বলেন, ‘শুধু গাছ রোপণ করলেই হবে না। গাছের যত্ন নিয়ে পরিচর্যা করে একে বড় করে তুলতে হবে।’
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজি (এঅ্যান্ডআই) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, অতিরিক্ত আইজি (এফঅ্যান্ডএল) এস এম রুহুল আমিন, অতিরিক্ত আইজি (এইচআরএম) মো. মাজহারুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজি মো. আতিকুল ইসলাম, পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং পুনাক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে আইজিপি এবং পুনাক সভানেত্রী পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স চত্বরে গাছের চারা রোপণ করেন।