আশিকুর রহমান :- নরসিংদীর শিবপুরে ঘটে যাওয়া জোড়া খুনের ঘটনায় এবার র্যাব-১১ হাতে গ্রেপ্তার হয় উমেদ ও আকরাম নামে দুই আসামীকে। ৬ ফেব্রুয়ারী রবিবার দুপুরে নরসিংদী র্যাব-১১ ক্যাম্পে লেফটেন্যান্ট কর্ণেল তানভীর মাহমুদ এর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জানানো হয় যে, র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। নরসিংদী জেলায় সংগঠিত চুরি, ডাকাতি, হত্যা, মাদক, অপহরণ, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীসহ সমাজে সংগঠিত বিভিন্ন অপরাধ রুখে দিতে র্যাব-১১ অভিযান আরও জোরদার করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় তথ্যের ভিত্তি র্যাব-১১ নরসিংদীর একটি চৌকস দল ৬ ফেব্রুয়ারী রবিবার ভোর আনুমানিক ৪.৫৫ মিনিটে নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার হাসিমপুর কলাবাড়ীয়া গ্রামের মৃত আবু সাইদের ছেলে মোঃ উমেদ আলী ( ৩৫) ও সদর উপজেলার মাধবদী থানাধীন নওয়াপাড়া ভগিরতপুর গ্রামের মৃত হাজী ফিরোজ মেম্বার এর ছেলে মোঃ আকরাম হোসেন ( ৩৪) কে গ্রেপ্তার করা হয়।এসময় তাদের কাছ থেকে সাড়ে ষোল (১৬.৫০) কেজি গাঁজা ও ২টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। তিনি আরও জানান যে, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, গত ৩ ফেব্রয়ারী বিকালে শিবপুর উপজেলার বাঘাব ইউনিয়নের শ্রীফুলিয়া বাসস্ট্যান্ডে ( ঢাকা-সিলেট) মহাসড়কের পাশে চাদর প্যাঁচানো অবস্থায় ২টি লাশ উদ্ধার করে শিবপুর থানা পুলিশ। লাশ ২টির পরিচয় সনাক্ত হওয়ার পরপরই পুলিশের পাশাপাশি র্যাব-১১ নরসিংদী হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে তদন্তে মাঠে নামে। পরে র্যাব-১১ নানাতদন্ত ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে জোড়া খুনের আসামী উমেদকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞেসাবাদ করলে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাদক কারবারের আরেক সহযোগী আকরাম হোসেনকে রায়পুরার দৌলতকান্দি গ্রাম হতে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় আকরামের কাছ থেকে সাড়ে ষোল(১৬.৫০) কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। বিভিন্ন সূত্র থেকে র্যাবের টিম নিশ্চিত হয় যে, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে গত ২ ফেব্রুয়ারী বুধবার রাতে রেন্ট-এ কারের চালক রুবেল মিয়া শাহজালালকে ফোন করে বলে মাধবদীতে ট্রিপ আছে। পরে রুবেল, শাহজালাল ও রাজু এই ৩ জনে শাহজালালের বাড়ি একত্রিত হয়। এসময় শাহজালালের বাড়িতে সোহেল, উমেদ ও তার সহযোগীরা ভিকটিমদ্বয়ের কাছ থেকে তাদের সাথে থাকা গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নিয়ে প্রাইভেটকার নিয়ে নেয় এবং সেই গাড়ি দিয়েই হত্যার শিকার রাজু, রুবেলকে শিবপুরের বড়ইতলা মনিরের বাড়িতে যায়। সেখানে মাদকের অর্থের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে উমেদ সোহেল ও তার সহযোগীরা শ্বাসরুদ্ধ করে রুবেল ও রাজুকে হত্যা করে। হত্যাকান্ড নিশ্চিত হওয়ার কিছুক্ষণ পূর্বে আকরাম ও আলমগীর ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ওইসময় শাহজালালও কৌশলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে র্যাবের চৌকস টিম উমেদকে গ্রেপ্তার করলে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, উমেদ ও সোহেলের সাথে রাজু ও রুবেল এর সাথে পূর্বেই মাদক ব্যবসা নিয়ে বিরোধ ছিল। তিনি আরও বলেন, আকরাম মূলত তাদের মাদক কারবারের সহযোগী এবং যে মাদকের কারণে হত্যা করা হয়েছে তা আকরামের কাছে আছে বলে জানতে পারেন র্যাব। যার প্রেক্ষিতে আকরামকেও গ্রেপ্তার করা হয় এবং তার কাছ থেকে রক্ষিত সাড়ে ষোল (১৬.৫০) কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। তারা সিলেট থেকে মাদক এনে নরসিংদী জেলা ও আশপাশের বিভিন্ন জায়গায় তা বিক্রি করতো। মূলত মাদক কারবারের আধিপত্য বিস্তার ও মাদকের টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা বিরোধে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। গ্রেপ্তারকৃত আসাম উমেদ ও আকরামের বিরুদ্ধে নরসিংদীর মাধবদী, রায়পুরা ও ঢাকার বাড্ডা থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। জোড়া খুনে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেপ্তারে র্যাব অভিযান অব্যাহত রেখেছে এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে আইনী কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। উল্লেখ্য গত ৩ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার নরসিংদীর শিবপুরের বাঘাব ইউনিয়নের শ্রীফুলিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে থেকে অজ্ঞাত পরিচয় দুই যুবকের লাশ উদ্ধার করে শিবপুর থানা পুলিশ। বিভিন্ন তথ্য মিলিয়েপুলিশ নিশ্চিত হয় নিহত দুই যুবক হলেন পলাশ উপজেলার খানেপুর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে রুবেল মিয়া (২৫) ও নরসিংদী সদর উপজেলার শাহেপ্রতাব এলাকার মোঃ রাজু (৩০)। ঘটনার পরপরই জেলা পুলিশ ও র্যাব-১১ নরসিংদী হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য মাঠে নামে।
সাংবাদিক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি!
তানিম টিভি লি: এর সংবাদ সংগ্রহ করার জন্য দেশের কিছু (জেলা ব্যতীত) সকল জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কর্মঠ, সৎ ও সাহসী কিছু পুরুষ ও মহিলা সংবাদদাতা/প্রতিনিধি নিয়োগ করা হবে।
আগ্রহী প্রার্থীরা পূর্ণাঙ্গ জীবন বৃত্তান্ত ই-মেইলে
tanimtvltd.news1@gmail.com