মাথায় ও পেটে একটি করে মোট দুটি টিউমার। ৬৬ বছর বয়সেও পরের রিকশা চালিয়ে জীবন চালান চট্টগ্রাম নগরের বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান। ভাড়ার রিকশার প্যাডেল চাপিয়ে বিয়ে দিয়েছেন চার মেয়ের। তাদের বিয়ের সময় গ্রহণ করা ঋণ পরিশোধের এখনও বাকি ৬৭ হাজার। তবে তার দুটি ছেলে থাকলেও বাবার কোনো খোঁজ নেন না। তাইতো জীবনসায়াহ্নে এসেও অসুস্থ শরীর নিয়েও নিয়মিত বের হন জীবিকার উদ্দেশ্যে।

শুক্রবার (১৬ জুলাই) সকালে পৌনে ১০টায় এ রিকশাচালক মোস্তাফিজের অসহায়ত্ব নিয়ে ‘মাথায়-পেটে টিউমার, রিকশা চালিয়ে জীবন চালান ৬৬ বছরের মোস্তাফিজ’ শিরোনামে একটি ভিডিওসহ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়
কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রতিবেদনটি দৃষ্টিগোচর হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপকমিটির সদস্য আরশাদুল আলম বাচ্চুর। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ওই রিকশাচালকের বিষয়ে খবরা-খবর নেন। এরপর বৃদ্ধ মোস্তাফিজকে তিনি একটি রিকশা বা ছোট দোকান উপহার দিতে ইচ্ছা পোষণ করেন। একইসঙ্গে রিকশাচালকের চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতেও আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।
তবে মোস্তাফিজ দোকানের পরিবর্তে একটি নতুন রিকশা নিতে আগ্রহী হন। এরপর মোস্তাফিজের ইচ্ছায় শনিবার (১৭ জুলাই) দিবাগত রাত ৯টার দিকে তাকে নতুন একটি রিকশা উপহার প্রদান করেন আরশাদুল আলম বাচ্চু। এছাড়া মোস্তাফিজের পরিবারের জন্য এক মাসের বাজার খরচ বাবদ বেশ কিছু নগদ টাকাও প্রদান করা হয়।
আনন্দাশ্রু ছেড়ে রিকশাচালক মোস্তাফিজ বলেন, ‘আমার জীবনে আজকের মতো খুশির দিন আর নেই। দীর্ঘ ৩০ বছর পরের রিকশা চালিয়েছি। আজকে একটি নতুন রিকশা পেলাম। আমাকে যে রিকশাটা দিলেন আল্লাহ তাকে যেন সুখে রাখেন। আমি নামাজ পড়ে উনার জন্য দোয়া করব। নিজের রিকশা চালিয়ে এখন আমার চার মেয়ের বিয়ের জন্য যে ঋণ গ্রহণ করেছিলাম, তা আস্তে আস্তে শোধ করতে পারব।’