নওগাঁ শহরে নৈশ প্রহরীর মৃত্যু রসহ্য উদঘার্টন, মূলহোতা সহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, স্টাফ রির্পোটারঃ নওগাঁ শহরে নৈশ প্রহরীর মৃত্যু রসহ্য উদঘার্টন পূর্বক যেভাবে অভিযান পরিচালনা করে হত্যার সাথে জড়ীত মূলহোতা সহ ২ জনকে গ্রেফতার করলো সিআইডি।

 নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে ইডেন অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এর ভেতর নৈশপ্রহরী আতাউর রহমানকে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনা উদঘার্টন পূর্বক ঘটনার সাথে জড়ীত মূলহোতা সহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। নৈশ্য প্রহরীকে পিটিয়ে হত্যা করার পরে পালিয়ে থাকা বাদল (৩৫) কে ঢাকার সাভার উপজেলার আমিন বাজার এলাকা ও আতিউর রহমান ওরফে শীতল (২৭) কে নওগাঁ থেকে গ্রেফতার করেন সিআইডি।

আজ মঙ্গলবার (৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সিআইডির রংপুর ও খুলনা বিভাগের ডিআইজি শেখ নাজমুল আলম।তিনি জানান, নওগাঁ শহরের প্রান কেন্দ্র মুক্তির মোড়ে ইডেন অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টের ভেতর নৈশপ্রহরী আতাউর রহমানকে পিটিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় ঘাতকরা। ঘটনার খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন আমাদের একটি টিম এবং এই ঘটনায় ছায়া তদন্ত শুরু করেন সিআইডি।

ডিআইজি শেখ নাজমুল আলম আরো বলেন, ঐ রেস্টুরেন্টের ভেতর প্রতিদিন নৈশপ্রহরী আতাউর রহমান ও রেস্টুরেন্টের সহকারী বাবুর্চি বাদল একসঙ্গে ঘুমাতেন। কিন্তু গত ২৯ মে সকালে রেস্টুরেন্টের প্রধান বাবুর্চি সাইফুল ইসলাম রেস্টুরেন্টে গিয়ে দাখেন সেখানে তালা ঝুলছে। অনেক ডাকাডাকি করার পরও রুমের দরজা না খোলার এক পর্যায়ে দরজার বাইরে চাবি পড়ে থাকতে দেখতে পান তিনি।

এরপর তিনি সেই চাবি দিয়ে ঘর খুলে মেঝেতে নৈশপ্রহরী আতাউর রহমানের রক্তাক্ত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে ঘটনাটি দ্রুত রেস্টুরেন্টের কর্তৃপক্ষকে জানান এবং নওগাঁ সদর মডেল থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশ ও সিআইডি’র একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওই ঘটনার পর থেকে সহকারী বাবুর্চি বাদল আত্মগোপনে চলে যায়। পরে সিআইডি পলাতক  বাবুর্চি বাদলের অবস্থান সনাক্ত পূর্বক ঢাকার সাভার উপজেলার আমিন বাজার এলাকা থেকে বাদলকে গ্রেফতার করেন।

সিআইডির হাতে গ্রেফতারের পর প্রথামিক জিজ্ঞাসাবাদে বাদল জানিয়েছে, ঘটনার দিন (২৮ মে) দিনগত রাতে প্রধান আসামী শীতলের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় আতাউরের। একপর্যায়ে শীতল ও তার সহযোগীরা চেয়ার দিয়ে পিটিয়ে তাকে আহত করেন। পরে আহত অবস্থায় তাকে বাদল ও শীতল সহ আরো কয়েকজন মিলে রেস্টুরেন্টের তিন তলায় নিয়ে একটি কক্ষে তালা দিয়ে চলে যায়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত বাদল আরো জানায়, এ ঘটনার সময় আরও ৪-৫ জন উপস্থিত ছিলো। তবে সে শীতল ছাড়া আর কারও নাম জানে না।

হত্যার পেছনে আরো কোন কারন আছে কি না সে ব্যাপারে ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে জানিয়ে সিআইডির ঐ কর্মকর্তা জানান, হত্যাকান্ডে জড়িত অপরদের নাম-পরিচয় ইতি মধ্যেই পেয়েছি। তাদেরকেও অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া গ্রেফতারকৃতদের নওগাঁর বিজ্ঞ আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে, জিজ্ঞাসাবাদ করে এই ঘটনার পেছনের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে বলেও জানিয়েছেন ঐ কর্মকর্তা।

গত ২৯ মে সকালে নওগাঁ শহরের প্রান কেন্দ্র মুক্তির মোড়ে ইডেন থাই অ্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এর ভেতর নৈশপ্রহরী আতাউর রহমানের মৃতদেহ দেখতে পেয়ে খবর দিলে নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশ সহ আমাদের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছার পরই প্রাথমিক সুরতহাল অন্তে মৃতদেহ  উদ্ধার করেন সিআইডি এবং নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে মৃতদেহর ময়না তদন্ত পূর্বক স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।