আবারও সচল হয়ে উঠেছে রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনাল। আজ থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হওয়ায় এখানকার বাস কাউন্টারগুলো প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে।

একদিকে, সরকারের কঠোর বিধিনিষেধের কারণে ঢাকায় আটকাপড়া মানুষরা স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে বাড়ি যাচ্ছেন। অন্যদিকে, ঈদ করতে বাড়ি গিয়ে যারা আটকা পড়েছেন তারাও বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় রাজধানীতে ফিরছেন।
গাবতলীতে বিভিন্ন পরিবহনের টিকিট কাউন্টারে দায়িত্বরতরা বলছেন, প্রথমদিন পর্যাপ্ত যাত্রী না পেয়ে আসন ফাঁকা রেখেই বাসগুলো ঢাকা থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। তবে ফেরার পথে দূরপাল্লার পরিবহনগুলো যাত্রীভর্তি করে নিয়ে ঢাকায় ফিরছে।
বুধবার গাবতলীতে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সরকারঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের কারণে বেশ কিছুদিন দূরপাল্লার পরিবহণ চলাচল বন্ধ ছিল। এ কারণে গাবতলীর বাস কাউন্টারগুলো ছিল তালাবন্দি। আজ থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু হওয়ায় ভোর থেকেই কাউন্টারগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে টিকিট বিক্রি শুরু করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানতে চাইলে ঢাকা টু রাজবাড়ী রোডের সৌহার্দ্য পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা সেলিম বলেন, প্রতিদিন আমাদের ১০ থেকে ১২টি বাস চলাচল করলেও সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত একটি বাস ছাড়া হয়েছে। পরের বাসের জন্য এ পর্যন্ত পাঁচটি টিকিট বিক্রি হয়েছে। ৪০ সিটের বাস ২০ জন যাত্রী হলে বাস ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। ঢাকা ফেরার সময় বাসভর্তি করে যাত্রী আনা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন জসিম। বুধবার গণপরিবহন চালু হওয়ায় সকাল সকাল গাবতলীতে এসে যশোর যাওয়ার টিকিট কেটেছেন। দুপুর ১২টায় গাড়ি ছাড়ার কথা রয়েছে, এ কারণে টিকিট নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন তিনি।
জসিম বলেন, ঈদের আগে অল্প সময়ের জন্য দূরপাল্লার পরিবহণ চালু থাকায় ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি যাননি। দূরপাল্লার বাস চালু হওয়ায় পাঁচ দিনের ছুটিতে তিনি যশোর যাচ্ছেন। নির্ধারিত ভাড়ায় টিকিট পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
দক্ষিণবঙ্গের চলাচলকারী দিগন্ত পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা আনিসুর রহমান জানান, প্রতিদিন তাদের ৪০টি বাস চলাচল করলেও সকাল থেকে ১০টি বাস ছাড়া হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটিতে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস ঢাকা ছেড়ে গেছে। পর্যাপ্ত যাত্রী না পাওয়ায় সিট খালি রেখে বাস ছাড়তে হচ্ছে।
তিনি বলেন, লকডাউনের কারণে অনেকে ঢাকায় আটকা পড়লেও হাতে টাকা না থাকায় বাড়ি যেতে পারছেন না।
বেনাপোল রোডের এসপি গোল্ডেন লাইন পরিবহনের টিকিট বিক্রেতা রঞ্জু বলেন, সকাল থেকে তিনটি বাস ছাড়া হলেও একটিও ৪০ সিট যাত্রী ফুল করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে মানুষ নানা ধরনের সমস্যায় থাকায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি যাচ্ছেন দা। যাত্রী না পেয়ে বাধ্য হয়ে খালি গাড়ি ছাড়তে হচ্ছে। তবে আসার সময় যাত্রীভর্তি করে এসব বাস ফিরছে বলেও জানান তিনি।
রাজধানীর ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রী ঐশ্বর্য। ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতে না পারলেও দূরপাল্লার বাস চালু হওয়ায় আজ রাজবাড়ী যাচ্ছেন। নির্ধারিত ভাড়ায় টিকিট কেনে কাউন্টারে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
ঐশ্বর্য বলেন, অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছি বাড়ি যাওয়ার জন্য কিন্তু বাস চলাচল না করায় যেতে পারিনি। আজ সকালে সবকিছু গোছগাছ করে তাড়াতাড়ি বেরিয়েছি। টিকিট নিয়েছি, দুপুর সাড়ে ১২টায় বাস ছাড়বে জন্য অপেক্ষা করছি। বাড়িতে কিছুদিন থেকে এরপর ঢাকায় ফিরবো।