করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারঘোষিত সপ্তাহব্যাপী বিধিনিষেধের চতুর্থদিনের সকালের বৃষ্টিতে জলে ভাসছে রাজধানী শহর ঢাকা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পাড়া-মহল্লার অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান প্রধান সড়ক, এমনকি পাঁচতারকা হোটেলের সামনের রাস্তায় বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। কোথাও কোথাও বৃষ্টির পানির সঙ্গে ডাস্টবিন ও সুয়ারেজের পানি মিশে একাকার হয়ে দুর্গন্ধ ছড়িয়েছে।

রোববার (৪ জুলাই) সকাল থেকে আকাশজুড়ে মেঘ ও পরবর্তীতে মুষলধারে বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল ও যানবাহনের সংখ্যা তুলনামুলকভাবে কম দেখা যায়। কিন্তু জরুরি প্রয়োজনে যারা ঘরের বাইরে বের হয়েছেন, বিভিন্ন রাস্তায় জলাবদ্ধতার কারণে তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। যারা ছাতা নিয়ে বের হননি তাদেরকে কাকভেজা হয়ে পথ চলতে দেখা যায়।
সরেজমিন রাজধানীর লালবাগ, নিউমার্কেট, ধানমন্ডি ও রমনা থানা এলাকার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে জন ও যান চলাচল কম দেখা যায়। বেলা ১১টার পর মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। সাড়ে ১১টায় রাজধানীর শাহবাগে পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের রাস্তায় বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে বাংলামোটর হয়ে কিংবা মিন্টুরোড হয়ে যেসব যানবাহন ও মানুষ শাহবাগ চৌরাস্তার দিকে যাচ্ছিলেন, তাদের ধীরগতিতে ও ধীরপায়ে পথ চলতে দেখা যায়। শাহবাগ বেতার ভবনে করোনা টেস্ট সেন্টারের ভেতরে পানি জমে যায়।
ফাইজারের টিকা নিতে বিএসএমএমইউ কনভেনশন সেন্টারে যাচ্ছিলেন গুলশানের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ আফজাল হোসেন। পথ ভুল করে মিন্টুরোড হয়ে বিএসএমএমইউতে যাচ্ছিলেন। হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে জলাবদ্ধতা দেখে গাড়ি থেকে ছাতা মাথায় নেমে যান। জানতে চান কনভেনশন সেন্টারটি কোথায়। এসময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এত উন্নয়নের কথা শুনি, অথচ ফাইভস্টার হোটেলের সামনের রাস্তায় সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে যায়। এগুলো কি সরকারের চোখে পড়ে না?’
রাজধানীর নিউমার্কেটের সামনের রাস্তায় বরাবরের মতো বৃষ্টির পানি জমে যায়। দুপুর ১২টার দিকে পুলিশের একটি টহল গাড়িকে নীলক্ষেত মোড় থেকে আজিমপুর কবরস্থানের দিকে যেতে দেখা যায়। নিউমার্কেট এক নম্বর গেটের সামনে এসে জলবদ্ধতা দেখে গাড়ি ঘুরিয়ে উল্টোদিকে যেতে দেখা যায়।
এ সময় মধ্যবয়সী এক ব্যক্তিকে হাটু পানিতে ভিজে নীলক্ষেতের দিকে যেতে দেখা যায়। নতুন পল্টন লাইনের এই বাসিন্দা আরমান আলী জানান, তিনি হাতিরপুলে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। প্রতিদিন এ পথে যান। বৃষ্টি হলেই এখানে হাটু পানি জমে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কিছুদিন পর পর উন্নয়নের নামে রাস্তা ও ড্রেন সংস্কারের কাজ চলে। কিন্তু বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মেলে না।’
রাজধানীর সায়েন্সল্যাবরেটরি থেকে এলিফ্যান্ট রোড বাটা সিগন্যাল পর্যন্ত বৃষ্টির পানি জমে যায়। এ ছাড়া বাটা সিগন্যাল থেকে কাঁটাবন মোড় ও হাতিরপুলে যাওয়ার পথে রাস্তায় জলাবদ্ধতা দেখা যায়। ঢাকা কলেজের বিপরীত দিকে মিরপুর রোডের রাস্তায় জলাবদ্ধতার ফলে যানচলাচল ব্যাহত হয়। এ ছাড়া পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার চিত্র দেখতে পাওয়া যায়।