ঈদের আর মাত্র দুদিন বাকি থাকলেও রাজধানীর গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীশূন্য অবস্থা তৈরি হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাসে ৪০ সিটের বিপরীতে ২০ জন করে নেয়া হলেও নির্ধারিত আসন পূর্ণ না হাওয়ায় দেরি করে ছাড়ছে। এ কারণে পরিবার নিয়ে অনেককে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আবার কোনো কোনো বাসের প্রতি সিটেই যাত্রী নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

রোববার (১৮ জুলাই) গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে হানিফ পরিবহনের দক্ষিণাঞ্চলগামী বাসের কাউন্টারে দায়িত্বরত জুবায়ের বলেন, ‘ঈদের আর মাত্র দুদিন বাকি থাকলেও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ৪০ সিটের বাসে ২০ জন নেয়ার কথা থাকলেও সিট খালি রেখে বাস ছাড়তে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বছর ঈদের সময়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২টি গাড়ি চলাচল করলেও এই ঈদে ৫ থেকে ৬টি গাড়ি ছাড়তে হচ্ছে।’ এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের বেতন পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি।
তবে কোনো কোনো পরিবহনের বাসে প্রতি সিটেই যাত্রী নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বাড়তি ভাড়া নিয়েও দুই সিট দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
এস ডি পরিবহনে যশোরে যাওয়ার জন্য টিকিট কেটেছেন জারা। ঢাকায় বেসরকারি একটি ক্লিনিকে চাকরি করেন তিনি। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘একেতো দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে, তার ওপরে দুই সিটের জায়গায় এক সিট দেয়া হয়েছে। এক সিটে একা বসতে কয়েকটি কাউন্টারে ঘুরেও লাভ হয়নি, তাই বাধ্য হয়ে এস ডি পরিবহনে টিকিট নিয়েছি।’
বরিশাল-পটুয়াখালী রোডের সুবর্ণ পরিবহন কাউন্টারের কাদের হোসেন বলেন, ‘সরকারি বিধি মোতাবেক ৪০ সিটের গাড়িতে ২০ জন করে নিয়ে গাড়ি ছাড়লেও যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। গাড়ি ছাড়ার সময় হওয়ায় সিট খালি রেখে গাড়ি ছাড়তে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সাধারণ সময়েও এর চাইতে যাত্রীর চাপ বেশি থাকে। ঈদের একদিন পর লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় মানুষ বাড়ি যাচ্ছে না। বাকি দিনগুলো যাত্রীর চাপ বাড়বে এই আশায় রয়েছি।’
অনেক পরিবহনের গাড়ি আবার তীব্র যানজটের কারণে ঢাকায় ঢুকতে পারছে না। যাত্রী থাকলেও তারা টিকিট বিক্রি করছেন না বলে জানিয়েছেন তারা।
পরিবারের সকলকে নিয়ে ঈদ করতে রংপুর যাচ্ছেন মিজান। খালেক পরিবহনে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে টিকিট পেয়েছেন। তবে সকাল ৯টার বাস বেলা ১১টা বাজলেও এখনো ঢাকায় পৌঁছায়নি বলে জানান। এ কারণে ছোট দুই বাচ্চাসহ কাউন্টারে বসে অপেক্ষা করছেন।
খালেক পরিবহন কাউন্টারের ইদ্রিস মিয়া বলেন, ‘যাত্রী সংকট, তাই সিট ফুল হলে গাড়ি ছাড়া হচ্ছে। রাস্তায় অনেক যানজট থাকায় সময়মতো গাড়ি ঢাকায় পৌঁছাতে পারছে না। এ কারণে গাড়ি ছাড়তে দেরি হচ্ছে।’
যশোর যেতে গত ১৫ জুলাই অগ্রিম টিকিট কিনেছেন শিক্ষার্থী গালিব। সাধারণ সময়ে ৪৮০ টাকা ভাড়া হলেও এখন ৮৫০ টাকায় নিতে হয়েছে। বাড়িতে গিয়ে সবার সঙ্গে ঈদ করবেন, এ কারণে বাড়তি ভাড়া দিয়ে টিকিট নিয়েছেন। বেলা সাড়ে ১১টায় গাড়ি ছাড়ার কথা। তবে নির্ধারিত সময় পার হলেও গাড়ি ছাড়েনি। এ কারণে গাবতলী বাস টার্মিনালেই অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাকে।