প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খাদ্য অপচয়রোধে সবার নজর দিতে হবে। সারাবিশ্বে খাদ্যের অভাব আছে। আবার খাদ্যের অপচয়ও হয়। সেজন্য উদ্বৃত্ত খাদ্য কাজে লাগানোরও পথ বের করতে হবে।

শনিবার (১৬ অক্টোবর) বিশ্ব খাদ্য দিবসের অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশ মঙ্গামুক্ত থাকবে। কেউ যেনো দুষ্কর্ম করে দুর্ভিক্ষ তৈরি করতে না পারে, সেদিকে নজর দিতে হবে। আমরা খাদ্য নিরাপত্তা ও চাহিদা পূরণ নিশ্চিত করবো।
এসময় বিরি ১০০ ধান উদ্ভাবকদের বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ কৃষি বিজ্ঞানী আমাদের দেশে আছে। তাদের গবেষণা সাফল্য অর্জন করেছে। আমি কৃষি গবেষক ও কৃষিবিদদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
তিনি বলেন, বীজ উৎপাদন করবো, অন্যের ওপর নির্ভরশীল হবো না। বীজ মান সম্পন্ন হতে হবে। সম্প্রসারণশীল হতে হবে। কোটালিপাড়ার টুঙ্গিপাড়ায় ভাসমান সবজি চাষ সারাদেশে সম্প্রসারণ করছি। বীজ তলা থেকে শুরু করে নানা রকম সবজি হয় কচুরিপনার ওপর। আশা করি, খাবারের অভাব থাকবে না। তবে খাদ্য ও পুষ্টির ওপর গবেষণা অব্যাহত রাখতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিইনি বলে দু’টি বৃহৎ প্রতিবেশী দেশ ২০০১ এ ক্ষমতায় আসতে দেয়নি। দেশ বেচে তো ক্ষমতায় আসবো না। আমার কথা হচ্ছে— আমাদের নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে পরে বিক্রি করবো।
তিনি বলেন, নিজেরা খাদ্য উৎপাদন করে চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি রপ্তানি করবো। অর্থ উপার্জন করবো। এটা আমরা পারি, পারবো। উৎপাদনের পাশাপাশি খাদ্যের মানও ঠিক রাখতে হবে।
সরকার প্রধান বলেন, সার কৃষকের হাতের নাগালে পৌঁছে দিয়েছি। অথচ এ সার চাইতে গিয়ে আন্দোলন করেছিল বলে ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছে খালেদা জিয়ার সরকার। বিদ্যুৎ চাওয়ায় ৯ জনকে হত্যা করা হয়।
নিজের সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, খাদ্য চাহিদা পূরণে বিনা পয়সায় খাদ্য বিতরণ করি। ১০ টাকায় চালের ব্যবস্থা করি। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ইত্যাদির মাধ্যমে মানুষের স্বাভাবিক জীবন-যাপনে সহায়তা করি।
তিনি বলেন, ‘কৃষি বাতায়ন’ (এগ্রিকালচার পোর্টাল), কল সেন্টার করে কৃষকদের নানা সহায়তার পথ উন্মুক্ত করি। কৃষি উপকরণ কার্ড করে দিচ্ছি। এর মাধ্যমে ২ কোটির ওপরে কৃষককে সরকারি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। ১০ টাকায় একাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করি। আমি বলেছি, ব্যাংক কৃষকের কাছে পৌঁছে যাবে, বর্গাচাষি সরাসরি লোন পাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের হটলাইন চালু আছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের অফিসের জন্য পূর্বাচলে ৫ বিঘা জমি দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।