স্পোর্টস ডেস্ক: লাল-নীল আর সঙ্গে ডোরাকাটা। বার্সেলোনাকে এই চোখধাঁধানো জার্সিতে বেশ লাগে। কাতালানদের সেই সোনালী প্রজন্মের প্রতিটি অর্জনে এ জার্সির অন্যরকম ছোঁয়া আছ।

তবে, গেল বছরই গ্রীষ্মকালীন দলবদলে লিওনেল মেসিকে হারিয়েই চিরচেনা এই জার্সিতে বড্ড অচেনা হয়ে উঠেছিলো দলটি। দুই দশক পর চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে অবনমন হয়ে ইউরোপা লেগে নেমে গেছে দল। চলতি মৌসুমের লিগেও একের পর এক টানা ব্যর্থতায় ফের ইউরোপ সেরার আসর খেলার সুযোগ হাতছাড়া করতে যাচ্ছিলো।
এমন সময়েই কাতালানদের কাটা গায়ে যেন নুন ছিটে দেন অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের কোচ। সিমেওনি বলেই দিলেন, বার্সা আর বড় দল নয়। ম্যাচের আগে লা লীগা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দলটির গুরু কাতালানদের কোচ নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করতেও ভুলে যাননি।
ম্যাচের আগে অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের অপমনই বার্সার জ্বলে উঠার জন্য যথেষ্ট ছিলো। দিয়েগো সিনেওনির করা অপমানের জবাব দিতেই লাল-নীল জার্সি গায়ে সেই চিরচেনা রুপে ফিরল দলটি। আর তাতেই গোটা ম্যাচে জুড়ে আক্রমণাত্মক ফুটবলের পসরা সাজিয়ে অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদকে গুড়িয়ে দিল জাভি হার্নান্দেজ বাহিনী।
স্প্যানিশ লা লিগায় হাই-ভোল্টেজ ম্যাচটি ৪-২ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। কাতালানদের হয়ে একটি করে গোল করেছেন জর্দি আলবা, গাভি, আরোহা ও দানি আলভেজ। অ্যাথলেটিকোর হয়ে গোল করেছে ফেরেরিও ক্যারেস্কো ও লুইস সুয়ারেজ। অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ পর জয়ে ফিরল বার্সা, যেখানে দুই ম্যাচই হেরেছিলো দলটি।
ন্যু ক্যাম্পে দুর্দান্ত খেলেছে বার্সেলোনা। গোটা ম্যাচে বল দখলের লড়াইয়ে ৫৭ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রাখে দলটি। যদিও গোলমুখে শট নেওয়ার ক্ষেত্রে দু দলই সমান দাপট দেখিয়েছে। পুরো ম্যাচে বার্সেলোনা ৯ শটের ৪টি রাখে লক্ষ্যে। বিপরীতে, সিমেওনির দল ১০ শটের ৪টি লক্ষ্যে রাখতে পারে।
ঘরের মাঠে ছন্দ খুজে পেলেও শুরুতে স্রোতে বিপরীতে গোল হজম করে বার্সেলোনা। ম্যাচের অষ্টম মিনিটেই ডান দিক থেকে লুইস সুয়ারেসের পাস পেনাল্টি স্পটের কাছে পেয়ে কোনাকুনি শটে সফরকারীদের এগিয়ে দেন ক্যারেস্কো। দুই মিনিট পরই সমতায় ফিরে বার্সা। দানি আলভেজের ক্রস রক্ষিত আলবা বা পায়ের দুর্দান্ত ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন।
বিরতির আগে আরও দুই গোল করে ম্যাচ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় বার্সেলোনা। ২১তম মিনিটে আদামা ট্রাওরের ডান দিক থেকে বাড়ানো ক্রসে লাফিয়ে হেড করে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন গাভি। ৪৩তম মিনিটে আরোহার গোলে ৩-২ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় জাভি শিষ্যরা।
বিরতির পর ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে অ্যাতলেটিকো। কিন্তু, রোজি ব্লাংকোসদের সেই স্বপ্নে পানি ঢেলে দেন দানি আলভেজ। ৪৯তম মিনিটে বাঁ দিকের বাইলাইন থেকে আসা বল পেয়ে ১৬ গজ দূর থেকে জোরাল শটে দলের হয়ে হালি পূর্ণ করেন অভিজ্ঞ এই ডিফেন্ডার।
১০ মিনিট পর এক গোল শোধ করেন লুইস সুয়ারেজ। ৬৯তম মিনিটে লালকার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন আলভেন। তবে, বাকি সময় দশজনের বার্সাকে পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি দিয়েগো সিনেওনির দল। ফলে আর কোন গোল না হলে ৪-২ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে জাভি হার্নান্দেজের দল।
এই জয়ে অ্যাতলেটিকোকে টপকে লা লিগায় চারে উঠে আসল বার্সেলোনা। ২২ ম্যাচে ১০ জয় ও ৮ ড্রয়ে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে কাতালানরা। সমান ম্যাচে দুই পয়েন্ট কম নিয়ে পাঁচে নেমে গেল অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ। ২২ ম্যাচে ৫০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে রিয়াল মাদ্রিদ।